মিস হিলুং,
"শ্যাডো ওয়ার্ল্ড" - এটা এমন একটা দেশ তথা যেখানে আমরা বসবাস করি। এখানকার ডিপ্লোমেট - দের একমাত্র কাজ ছায়ার মত ভিন্ন দেশের পেছনে লেগে থাকা। এই পেছনে লেগে থাকার বিশদ কারণ রয়েছে যা আমরা সামান্য কিছুক্ষণ পরেই জানতে পারবো মি. জো এর বক্তব্য থেকে। কারণ, এই সাদা মহলে আজ তিনিই আমাদের জরুরি ভাবে আমন্ত্রণ করেছেন। তাই এই আমন্ত্রণ আমাদের জন্য খুব অর্থবহ। "
হঠাৎ, চেয়ার থেকে দন্ডায়মান হয়ে মিস্টার কিলার বললেন - " তো মিস্টার জো এর-ই ত পাত্তা নেই। হুদাই বসে বসে তোমার ফাও বাতেলা শুনতে হচ্ছে। তাও যদি নতুন কিছু বলতে এসব-ত আমাদের জানা কথা। নতুন করে কোন দেশের পটু মারতে হবে সেটা নিয়েই -ত আলোচনা হবে। কিন্তু এতে এতো বিলম্ব কেনো?"
মিস হিলুং মুচকি হাসি দিয়ে বললেন,
"যাহ দুষ্টু এরকম পচা কথা কেউ বলে নাকি। একটু পজিটিভ ভাবতে শিখো পিও"
- "আমি-ত তাও এখনো নিজের টেম্পার কন্ট্রোলে রেখেছি। মিস্টার ডলু ক্ষেপে গেলে আর রক্ষা নাই। দয়া করে একটু বলবেন কি ওনার আসতে কতটা সময় লাগবে।"
মিস হিলুং অত্যন্ত শান্ত সুরে বললেন-
"উনি একটা মিটিং আছেন। আসতে আর ৫-৬ মিনিট লাগতে পারে"
মিস্টার ডলু,
"ঠোঁট নেড়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগলেন - ওসব -ত জানা কথা কোন মিটিং-এ যে উনি গিয়েছেন। আজরাইল নামক স্টেট-এ অস্ত্র সাপ্লাইয়ের চুক্তি নবায়ন করতে। অশান্তির মধ্যে শান্তির মা কে ঠেলে দিতে হবে না। কিন্তু, নতুন কোন দেশে আবার শান্তি'র মা প্রতিষ্ঠা করতে হবে কে জানে? অপেক্ষা করা ছাড়া-ত আপাতত কিছু করার নেই । "
মোটামুটি ১০-১৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো - কোন খোজ নেই মিস্টার জো-র। সভা প্রায় উত্তপ্ত অবস্থা মিস হিলুং-র সুন্দর সুন্দর কথায় আর চিড়ে ভিজছে না। মিস্টার ডলু এতো সময় চুপ করে থেকে হট্টগোল লাগিয়ে দিলো। তিনি রাগান্বিত কন্ঠে কিন্তু সুশীল ভাষায় বললেন-
"আমার প্রতিটা সেকেন্ডের ভ্যালু ১ ডলার। মিস্টার জো সভায় বিলম্ব করুক অসুবিধে নেই। কিন্তু আমার সেকেন্ডের ব্যয়ের হিসাবটা তাকে দিয়ে দিবেন - মিস হিলুং। নেহাত এখানে সুন্দরী হালকা উষ্ণ মিস হিলুং আছে তাই সেকেন্ডের ব্যয়টা কম করে বললাম। তা না হলে ৩০ ডলার করে হাকাতাম।"
মিস হিলুং মুচকি হাসলেন। কিন্তু, সভা এখন আর সভা নেই পুরাই মাছের বাজার। সবাই হট্টগোল করলেও এক কোণে বেশ বৃদ্ধ মিস্টার কিসিঞ্জার চুপচাপ বসে আছেন। এবং মুচকি হাসছেন। তার হাসিটা খানিকটা রহস্যময় আবার তাচ্ছিল্যতায় পরিপূর্ণ। হঠাৎ সভার প্রবেশ পথে দন্ডায় মান দুই মূর্তি তাদের হাতে থাকা লম্বা নল ওয়ালা রাজকীয় বাশি বাজাতে শুরু করলেন। চারিদিকে পিন পয়েন্ট নীরাবতা। সবাই চুপ। কারণ, এই বাশি-র সুরই মিস্টার জো-র জরুরি সভায় প্রবেশ করার আগাম বার্তা।
মিস হিলুং,
"তার প্রারম্ভিক বক্তব্য শুরু করলেন। আর এদিকে মিস্টার জো গুটি গুটি পায়ে অতি ধীরে সভায় প্রবেশ করছেন। মিস হিলুং তার গলার স্বর আরো সুউচ্চ করে বলতে শুরু করলেন- আমাদের শ্যাডো ওয়ার্ল্ড -র প্রভু এখন আপনাদের সামনে উপস্থিত। আর কিছু সময়ের মধ্যেই তিনি তার নেক্সট "খেয়ে দেওয়া" পরিকল্পনা আপনাদের সামনে তুলে ধরবেন। মনে রাখবেন সভাসদ গণ আমরা হলাম সেই জাতি - যারা এই "খেয়ে দেওয়া" প্রকল্প দিয়ে রাজার হালে খেয়ে পরে বেচে আছি। এবং নিজেদের উন্নয়ন করেছি। এই প্রকল্পের অগ্রযাত্রায় বহু প্রভু আমাদের মাথার উপর ছাদ হয়ে এসেছেন এবং দুনিয়া থেকে বিদায়ও নিয়েছেন। কিন্তু, "খেয়ে দেওয়া" প্রকল্প কে চলমান রাখতে এবং তা বাস্তবায়ন করতে তাত্ত্বিকভাবে তথা কুট পরামর্শ দিয়ে আমাদের যুগের পর যুগ সাহায্য করে আসছেন বুদ্ধিবৃত্তিক বুড়ো সমাজ। যারা কখন এই শ্যাডো ওয়ার্ল্ড -র প্রভুত্ব চাই নি। শুধু নিরলস পরিশ্রম করে গিয়েছেন এবং যাচ্ছেন কিভাবে পুরো দুনিয়াকে "গণতন্ত্র" নামক ঝগড়াতন্ত্রের মাধ্যমে "খেয়ে দেওয়া" প্রকল্প টিকিয়ে রাখা যায়। সে যাইহোক এখন আপনাদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ নেক্সট "খেয়ে দেওয়া" প্রকল্প সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন বুদ্ধিবৃত্তিক বুড়ো সমাজ দ্বারা নির্বাচিত প্রভু মিস্টার জো। সবাই তাকে করতালির মাধ্যমে সম্মানিত করুন।