Whatsapp: +8801567808596

  |  

Track Order

Blog post main image

শ্যাডো ওয়ার্ল্ড : ২য় অংশ

মিস্টার জো খুব-ই শান্তভাবে তার বক্তৃতা দেয়ার ডেক্সের সামনে আসলেন এবং মাইকের সাউন্ড ঠিকঠাক পুরো রুম কাভার করছে কি না তা চেক করলেন। 

এরপর জো তার বক্তৃতা শুরু করলেন - 

"আমার প্রিয় সভাসদগন আমি অত্যন্ত পুলকিত- যে আপনারা এই সভায় যোগদান করেছেন অতি আগ্রহের সাথে। আপনারা জানেন আমরা এমন এক জাতি যাদের কাজ সারা বিশ্বে আমদের বিভিন্ন রকম পলিসি এপ্লাই করে থাকি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। আর, এই যাত্রা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। নতুবা আমাদের পেটে ভাত জুটবে না। বড় দেশ থেকে ক্ষুদ্র দেশ প্রতিটা দেশ কে আমাদের শান্তির নামে অশান্তি'র মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইয়ে মানে, বিষয়টা এমন না আমি বলতে চাচ্ছিলাম আশান্তি দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পুরোপুরি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এরজন্য আমাদের প্রায়ত গুরুদেব তথা অবিসংবাদিত তাত্ত্বিক এবং  নেতা মিস্টার লংকা "জণতন্ত্র" নামক এক পদ্ধতি প্রনয়ণ করেছেন। কিন্তু, আমাদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি নামে মাত্র রাখা হয়েছে। কারণ, ইহা এক প্রকার "ভেজালতন্ত্র"। ভেজাল জিনিস দেখতে সব সময় চাকচিক্যময় হয়। কিন্তু, আসলে তা মাকাল ফল। এই তত্ত্ব দিয়েই আমরা আজ সারা বিশ্বের মানুষকে বলদ বানিয়ে রেখেছি। এরমধ্যে কিছু বলদ হঠাৎ করেই জ্ঞানী বলদে পরিণত হয়। ঠিক সেই সময়-ই আমাদের অতি সচেতনতার সাথে এসব বলদ দের হ্যান্ডেল করতে হয়। এই মহান "জণতন্ত্র" এমন এক গোলকধাঁধা যেখানে সব সময় এন্টিবডি তথা এন্টি পার্টি থাকবেই। যখনই কোন দেশ আমাদের আবদার পূরণ করতে অস্বীকৃতি জানাবে। ঠিক তখন-ই ওদের দেশেই যে এন্টিবডি আমরা সো কল্ড "জণতান্ত্রিক" - পদ্ধতির মাধ্যমে গড়ে তুলেছি তাদের কে ডিপ্লোমেটিক রাস্তায় ক্ষেপিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে -

 "আমলাতান্ত্রিক পুজিবাদী সমাজব্যবস্থায় ক্ষমতার লোভ সবার আছে "। তাই এই পলিটিক্যাল পদ্ধতির বিরোধিতা যারাই করবে তাদের রুখে দিতে হবে। হয় পেশি শক্তি দিয়ে নতুবা ফরেন পলিসি মাধ্যমে। আর, আমাদের জন্য সবচেয়ে সহজ হয় ঐ সব দেশগুলো কে ঘায়েল করা যেসব দেশে  ধর্মের আবাদ বেশি। কারণ, আমরা বহু আগেই তাদের ধর্মীয় মতবাদ কে বিভিন্ন স্পাই লাগিয়ে খন্ড-বিখন্ড করে দিয়েছি। সে যাইহোক মুল কথায় আসা যাক - 

আমাদের নেক্সট প্রকল্প "বাল্টুদেশ"। এই দেশের বর্তমান শাসক লম্বা সময় ধরে ক্ষমতায় বসিয়া আছে। আবার ইদানীং এই পুচকে দেশ আমাদের চোখ রাঙায়। এট এ্যানি কস্ট, এই দেশের উন্নয়নের যাত্রা রুখে দিয়ে আমাদের দাসে পরিণত করতে হবে। এদেশ কে সিস্টেমে ফ্যালাইতে আমাদের এতো বেগ পেতে হবে না। কারণ, ইতি মধ্যেই আমরা যথেষ্ট ইনফরমেশন কালেকশন করেছি ওদের দেশের-ই কিছু মীর জাফর টাইপ এন্টিবডি-র কাছ থেকে। সব থেকে বড় আরামের ব্যাপার হলো বাল্টুদেশ -র জনগণ প্রথমত চোর-ডাকাত মনোভাবের। অন্যদিকে আবার ব্যাপক ধর্মান্ধ। যৌক্তিক চিন্তাভাবনা এদের মধ্যে নাই বললেই চলে।  এটাই আমাদের মেইন লুপ। আর ঐ দ্বীপগুলোতে আমাদের এক শত্রু দ্বীপ রয়েছে। যার ফলে আমরা ওখানে ভৌগোলিক দিক থেকে  ঐ শত্রু দ্বীপকে নজরে রাখার মত কোন সেইফ এক্সিস্ট পয়েন্ট পাচ্ছি না। কারণ, বাল্টুদেশ -র বর্তমান শাসক আমাদের শত্রু দ্বীপ গুলোর সাথে অলরেডি হাত মিলিয়েছে এবং আমাদের আবদার পূরণ করছে না। তাই আমরা একটি অতি ক্ষুদ্র গেইম প্লান সাজিয়েছি। যা আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠ অত্যন্ত সম্মানিত মিস্টার কিসিঞ্জার সাহেব দিয়েছেন। তার প্রনয়ণ করা পদ্ধতির "কি" পয়েন্ট গুলো আমি তুলে ধরছি। বাকি পুরো থিসিস সভা শেষে মিস হিলুং আপনাদের সবার কাছে পৌছে দিবে। "কি" পয়েন্ট গুলো হলো- 

১. বাল্টুদেশ'র শাসক কে ইকোনমিক্যালি চাপে রাখতে হবে। 

২. যেকোন ছোট ছোট দাবি আদায়ের আন্দোলন কে এমনভাবে আমাদের পেইড মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। যেনো বাল্টুদেশ'র শাসক একজন স্বৈরাচারী শাসক এবং ফ্যাসিস্ট। 

৩. দেশের মধ্যে ক্ষমতা লোভি ছোট ছোট দল গুলো কে ফান্ডিং করতে হবে। 

৪. একদিকে সো কল্ড নাস্তিকদের স্পেস দিতে হবে অন্যদিকে ধর্মীয় নেতাদের ক্ষেপিয়ে তুলতে হবে। 

৫. বাল্টুদেশ'র সবচেয়ে উইক জোন হচ্ছে এরা সবাই টাকার পেছনে দৌড়ায়। টাকা'র কাছে এদের সব নৈতিকতা হাওয়া। তাই, আর্মি জুনিয়র অফিসারদের আমাদের টার্গেট করতে হবে। অত:পর,  "গণতান্ত্রিক" মতাদর্শের জু জু কে আবার জাগিয়ে তুলে আমদের সিলেক্টেড পুতুল সরকার বসাতে হবে। 

এই ৫ নীতির উপর আমাদের কিছু দিন শ্রম দিয়ে যেতে হবে। তাহলেই এই বাল্টুদেশ কে অচিরেই আমাদের পায়ের নিচে আনা যাবে। কে কোন পয়েন্টে কাজ করবে তা আগামি অধিবেশনে জণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বুঝিয়ে দেয়া হবে। সারা বিশ্বে এভাবেই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে আমাদের। মানুষের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। 
বন্ধুগন, এখানেই আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। "

মিস হিলুং তার সমাপনী বক্তব্য-র মাধ্যমে সভা শেষ করলেন। এবং সবাই ধীরে ধীরে সভা ত্যাগ করতে লাগলেন। 

মিস্টার ডলু, মনে মনে বিড়বিড় করতে করতে বলছেন-
 
"বাল্টুদেশ'র পটু মারা শেষ। অনেক কিছুই কইতে মন চায়। কিন্তু বলার-ত উপায় নাই। হালার নিজের দেশেই " জণতন্ত্র" নাই। অন্যদেশে যায় - ঘোড়ার আন্ডা প্রতিষ্ঠা করতে। যাইহোক কি আর করার। লিডার ইজ অলওয়েজ রাইট"